শনিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২১, ০২:৪৬ অপরাহ্ন
সপ্তাহ খানেক আগের কথা; আমার আফফান টিউশনি থেকে এসে কান্না জুড়ে দিল।
ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে তার আম্মুর কাছে নালিশ করল, ম্যাডাম আমার পিঠে চড় দিয়েছে।
আমি বাড়ি আসার পর ঘটনা শুনে আমারও খারাপ লাগল যে,চার বছরের পুচকে ছেলেকে পড়ার জন্য মারা কি ঠিক হয়েছে?
বিষয়টি নিয়ে ভাবতে ভাবতে হারিয়ে গেলাম আমি আমার জগতে।
রে আইয়ুব! তোর ছেলের গায়ে পড়ার জন্য আঘাত তুই সহ্য করতে পারিস না।অথচ প্রতিদিন সকালে এরকম ছোট ছোট ছেলেদেরকে তুই কান ধরে উঠবস করাস!
শীতের এই সকালেও পড়া না পারা বা ক্লাসে দেরিতে আসার অপরাধে বেত্রাঘাত করিস এটা কি সেসকল কোমলমতি শিশুদের নিষ্পাপ হৃদয়ে রেখাপাত
করে না?
তারা-ও কি বাড়িতে যেয়ে বাবা-মা’র কাছে অভিযোগ দেয় না?
তোর মত তাদেরও কি খারাপ লাগে না।
হতে পারে সে কাল,কুশ্রী, বেঁটে খাটো, দেখতে বেখাপ্পা কিন্তু সন্তান তো সন্তান!
আচ্ছা, পেটানো ছাড়া আদর দিয়ে কি এদের পড়ানো যায়?
একবার কি চেষ্টা করে দেখা যেতে পারেনা?
যেহুতু দাবী অনুসারে আমি নবীজীর ওয়ারিশ সুতরাং হযরত আনাস রাঃ এর সাথে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে আচরণ আমিও আমার রুহানি সন্তানদের সাথে এই আচরণ দেখাতে পারি।
যেই ভাবা সেই কাজ। মসজিদে এসে লাঠিটা ভেঙে পুকুরে ফেলে দিলাম।
বাচ্চাদের আদর দিয়ে, চকলেট দিয়ে কাছে টেনে নিলাম।
পড়া পারলে পুরষ্কার আর না পারলে স্বান্তনা ও উৎসাহের পথে হাঁটলাম। এভাবে
লাঠিপেটা আর বকাঝকা বিহীন পুরষ্কার ও স্বান্তনাময় তিনদিন অতিবাহিত হল।
আলহামদুলিল্লাহ
এখন আমিও খুশি আমার বাচ্চারাও খুশি।
ক্লাসে ছাত্র বেড়েছে আগের চেয়ে ঢের।পড়ার পালে লেগেছে হাওয়া ।
অবশ্য শিশুদের দুষ্টমির বেলায় আমাকে অনেক ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হয়।
যখন মন মেজাজ কড়া হয়ে যায় তখন ভাবি এই পুষ্পকলিগুলোর ক্ষেত্রে যদি একটু ধৈর্য্য না দেখাতে পারি তাহলে আর কেমন দরদী মালী হলাম,আর কিভাবেই বা নবীর ওয়ারাসাতের মান রাখলাম?