শনিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২১, ১২:১৭ অপরাহ্ন
তাবলীগ নিউজ বিডিডটকম | টঙ্গীর ইজতেমার ময়দান ঘিরে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘোষণা ঘিরে আইন- পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা জানিয়ে নির্বাচনের আগে ওই ময়দানে যে কোনো ধরনের জমায়েত বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ২৯ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি নির্দেশনা অনুলিপি মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের তরফ থেকে ইসিতে করা আবেদনে টঙ্গী ময়দানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের (৩০ ডিসেম্বর) আগে এ ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে তাবলীগের মূলধারা সাথীদের ৩০নভেম্বর থেকে ৫দিনের জোড় বানচাল করতে জঙ্গী স্টাইলে দেশীয় অস্ত্র লাটিসোটা সহ ঢাকা ও আশপাশ জেলার কওমী মাদরাসার হাজার হাজার ছাত্রকে ময়দানে জমায়েত করা হয়েছে। একপক্ষকে মাঠের ভিতরে রেখে এমন নির্দেশনা কতোটা কার্যকর হচ্ছে এনিয়ে উদ্ধিগ্ন লক্ষ লক্ষ তাবলীগের সাথী। কেউ কেউ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন। এমন বৈর মনোভাবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটুকো উন্নত হবে এবং ইসির নির্দেশনা ফলপ্রসূ হবে এমন আশংকাই ব্যাক্ত করছেন সচেতন মহল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) তাবলীগের সাথীরা লিখিতকারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে। এরপরই নির্বাচন কমিশন এই নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু সরকারী নির্দেক তোয়াক্কা না করে তাবলীগের মূলধার বিচ্যুত লোকজন ভারাটিয়া দিয়ে মাঠে উগ্রপন্থায় দখল করে রাখার কারনে সরকারী নির্দেশ আজ সকাল পর্যন্ত কার্যক্রর করতে ব্যার্থ হয় প্রশাসন। ফলে যে কোন সময় এই দ্বীমূখি আচরনের ফলে দাবী আদায়ে মাঠে প্রবেশ করতে পারে তাবলীগের কয়েক লক্ষ সাথী।
এর আগে গত মঙলবার সাংবাদিক সম্মমেলনে করে তাবলীগের সাথীরা বলেন, তাবলীগের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু লোক আলেমদের ভুল তথ্যদিয়ে তাবলীগের কাজকে বাঁধাগ্রস্থ করতে নানান ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করে আসছে। সারা দেশে নিজামুদ্দিন অনুসারী তাবলীগের মূলধারা সাথীদের গাশত, তালিম ও জামাতে যেতে বাঁধা দিচ্ছে। যা আমাদের নাগরিক অধিকার হনন ও ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করা ও হস্তক্ষেপের শামিল। দেশের একজন সুনাগরিক হিসাবে আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের ধর্মীয় কাজ করতে কোন প্রকার বাঁধা ও সহিংসতা এড়াতে আমরা সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিশ্ব ইজতেমার আগে প্রতি বছর ইজতেমা সফল করতে ৫দিনের জোড় অনুষ্ঠিত হয়।
৩০শে নভেম্বর শুক্রবার থেকে টঙ্গির ময়দানে দাওয়াত ও তাবলীগের পুরানো সাথীদের ৫দিনের জোড় অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। উক্ত জোড়ে সারাদেশের অন্তত ৬ লক্ষ তাবলীগের তিন চিল্লার সাথী অংশ গ্রহন করবেন।
আপনারা নিশ্চয় জানেন, বিগত ৬০বছর যাবৎ দিল্লীর নিজামুদ্দিন মারকাজ ও কাকরাইলের মুরুব্বীদের তত্বাবধানে এই জোড় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিগত ১বছর আগে এই জোড়ের ফায়সালা হয়েছে। বাংলাদেশের তাবলীগের মূলধারার মুরুব্বীগন এই বছরের ৫দিনের জোড় করার ব্যাপারে চুড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
কিন্তু, সম্প্রতি দুঃখজনক সংবাদ হল, যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে এসেছে যে, উক্ত ৫দিনের জোড়কে বানচাল করতে, বিগত কয়েকদিন যাবৎ টঙ্গীর ময়দান পাহারার নামে ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে কওমী মাদরাসার কোমলমতি ছাত্রদের লাঠি-সোটাসহ টঙ্গির ময়দানে জড়ো করা হয়েছে।
কোন সংঘাতময় কাজে এভাবে শিশু কিশোরদের ব্যবহার করা সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, মানবিক ও শিশু আইনে মারাত্বক অপরাধ, অন্যায় ও গর্হিত কাজ বলে বিবেচিত। ৫দিনের তিনচিল্লার সাথীদের জোড়ের দিন কোনভাবেই টঙ্গীতে ছাত্রদের থাকার সুযোগ নেই। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশের তাবলীগের সাথীরা যথা নিয়মে টঙ্গীর ইজতেমার ময়দানে পৌছবে।
এতে করে যদি মাদরাসার ছাত্রদের কেউ রাজনৈতিক হীনস্বার্থে উস্কে দিয়ে সেদিন কোন প্রকার, দুঃঘটনা বা সংঘর্ষ বা সংঘাত ঘটায়, তাহলে এর দ্বায়ভার অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসার উস্তাদ, মুহতামিম, কতৃপক্ষকেই নিতে হবে।