রবিবার, ০৭ মার্চ ২০২১, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন
সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ |তাবলীগ নিউজ বিডিডটকম | এক. কওমি মাদরাসা। আমাদের প্রাণের ঠিকানা। প্রেমের আশ্রয় স্থল। শিকড়ের গভীরতা। রক্তের সংমিশ্রন। আত্মার স্পন্দন বলা চলে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হেরার জ্যোতির আলোকিত ভূবন। সাহাবাদের স্বর্ণালী চেতনার নববী ইলম চর্চার এক বাগিচা। দারুল উলুম দেওবন্দের চেতনা ফেরি হয় যেখানে। এখনো এদেশের কোটি কোটি মানুষের দ্বীনী পথচলার বাতিঘর।
আমি আমার কথা বলছি। আমার পূূর্বপুরুষদের আমল থেকে এই মাদরাসা শিক্ষা পরিবারের বুনেদি শিক্ষা। এই প্রতিষ্ঠানের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত আমার দাদা পরদাদাগণ। তাদের হাজার হাজার ছাত্র আজো আমাদের অঞ্চলে আছেন। নিজেও এই মকবুল কওমী আঙ্গিনাতেই বেড়ে উঠেছি। দেশের বড়বড় শায়খুল মাশায়েখদের সোহবত পেয়েছি শৈশব থেকে। বিশেষ করে দেওবন্দের মাদানী পরিবার ও কুতবে আলম মাদানী রহ. এর সকল খলিফাদের একটি সুতিকাগার ছিল আমাদের বাড়ি।
ফলে তাদের চেতনাজুড়ে যে দেওবন্দিয়ত ও কওমি মাদরাসার কথা বারবার শুনেছি দেখেছি তার সাথে হালের কওমীঙ্গনের মিল খোঁজে পাওয়া দুস্কর। এমনকি আজকের অনেক কওমি সাদরাসা এমন হয়েছে যা পূর্বের আলীয়া মাদরাসাগুলো থেকেও তাকওয়া পরহেজগারীর ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে।
কয়কদিন আগে একজন বুজুর্গ আলেম বললেন, আলীয়া মাদরাসা এখন কলেজে রূপ নিয়েছে, আর কওমী আলীয়াতে পরিণত হচ্ছে।
একসময় কওমি ও আলীয়া নামে মাদরাসা শিক্ষার দুটি ধারা উপমহাদেশে তৈরি হয়েছিল। দুটি ধারার মাঝে মৌলিক বিরোধ ছিল নিজস্ব স্বকীয়তার প্রশ্নে। আজ একই প্রশ্নে খোদ কওমী মাদরাসার ভিতর দুটি স্রোত তৈরি হচ্ছে। এবং তৈরি হতে বাধ্য হচ্ছে শ্বাসত ঐতিহ্যের স্বার্থেই। স্বকীয়তার প্রশ্নে তৃতীয় আরেকটি কওমীর বুনেদি ধারা তৈরি হলে অবাক হবার কিছু থাকবে না।
খোদ কওমি মাদরাসার সাথে যারা নিবিড়ভাবে জড়িত। কওমি মাদরাসা কমিটির সদস্য, দাতা, শুভাকাংখী ও অভিভাবকরা ইদানিং উদ্বেগ্ন হয়ে বলছেন, স্বকীয়তার প্রশ্নে যে প্রতিষ্ঠান আপোষহীন ছিল তারা আজ চরমভাবে স্বকীয়তা হারাতে বসেছেন নানান কারনেই। ফলে নিজ সন্তানদের গদবাধা কওমী মাদরাসায় পড়ানো নিয়ে তাদের পেরেশানীর শেষ নেই।
এছাড়া অনেক পরহেজগার খোদাভীরু তাকওয়াবান আলেম বিকল্প স্বকীয়তার প্রশ্নে আপোষহীন কিছু কওমি মাদরাসা নানান স্থানে ইতোমধ্যে খোলা শুরু করেছেন। এটি যেমন আশার কথা, নীড়ে ফেরার কথা, তেমনি এতে রয়েছে প্রচলিত অধিকাংশ মাদরাসার স্বকীয়তা বিনষ্টের শঙ্কাবহ হাতছানির ব্যথা। এতে ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন অভিভাবকগণ। কেন স্বকীয়তার প্রশ্নে দুই ধারা তৈরি হচ্ছে একই অঙ্গনে? কোন পথে হাটছেন আমাদের জমহুর আলোমরা বাংলাদেশের অধিকাংশ কওমি মাদরাসা নিয়ে? এসব প্রশ্নের উত্তর একদিকে যেমন লজ্জজনক তেমনই ভয়ানক।
তবে আজো যে কিছু কওমি মাদরাসা তার বুনেদী ঐতিহ্য আর সত্যিকারের স্বকীয়তার উপর নেই তা কিন্তু নয়। তবে সংখ্যাটি খুবই কম। সাধারন দ্বীনদ্বার অনেক অভিভাবক খোঁজে পান না তাদের কাংখিত ‘গুলিস্তান’টি। অধিকাংশ কওমি মাদরাসা আকাবির আসলাফ ও দেওবন্দ আন্দোলনের মূলধারা থেকে ক্রমশ দুরে সরে যাচ্ছে। অনলাইন অফলাইনে একটা উগ্র চরমপন্থী তরুন সমাজ বের হয়ে আসছে সেখান থেকে। তারা আকাবিরদের মতো শীতল মস্তিষ্কের আলেম না হওয়ার ফলে, তাদের থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে মুসলিম সমাজ। এটাই আজ কঠিন এক বাস্তবতা। আমার সাথে এ অঙ্গনের প্রেমময় অধিকাংশ মানুষ একমত হলেও যারা কওমি মাদরাসার শত বছরের স্বকীয়তাকে বিনষ্ট করে, নিজের স্বার্থসিদ্ধির একমাত্র মাধ্যম বানিয়েছেন, তারা নিশ্চয় চটে যাবেন। কিন্তু এটাই বাস্তবতা।
দুই.
এটা আগে বুঝতে হবে কওমি স্বকীয়তা কি। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, তায়াল্লুকমায়াল্লা, (আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরি) সুন্নতের এহতেমাম, এলমি এস্তেদাদ (যোগ্যতা), ঈমানের গভীরতা, একীনের মজবতু, আখলাকের বুলন্দি, মোয়ামালাতে পাকিজি (পবিতত্রা), মোয়াশারাতে উন্নতি,।
স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, সাহাবাদের মতো এয়াকীন, আকাবিরদের মতো তাকওয়া, নবীদের মতো উম্মাহর দরদ, স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় পূর্বসূরী আসলাফদের মতো আপোসহীনতা, সততা, ন্যায়, নীতি, আমানত, পদের নির্মোহতা, ক্ষমতার প্রতি অনীহা, চেয়ারের লোভহীনতা, মখলুকের একীন থেকে বেপরোয়া। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, “তোরা চাসনি কিছু পরের কাছে খোদার মদদ ছাড়া/পরের উপর ভরসা ছেড়ে নিজের পায়ে দাড়া।”
স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, কওমী মাদরাসার একেকজন ছাত্র শায়খুল হিন্দের মতো বিপ্লবী হওয়া, কাসেম নানুতবীর মতো তাকওয়া ওয়ালা হওয়া, রশিদ আহমদ গাঙ্গোহীর মতো মুখলেস হওয়া, হুসাইন আহমদ মদনীর মতো আল্লাহ ওয়ালা রাজনৈতিক হওয়া, আবুল কালাম আযাদের মতো যুগ সচেতন হওয়া, হাকীমুল উম্মত থানভীর মতো বিদগ্ধ লেখক ও বুর্যুর্গ হওয়া, হযরতজী ইলিয়াস এর মতো দরদী দা’য়ী হওয়া, শায়খুল হাদীস জাকারিয়ার মতো গভীর এলেমের অধিকারী হওয়া। আলী মিয়া নদভীর মতো আরবী পন্ডিত ও জ্ঞান তাপস হওয়া। মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফের মতো মেজাজে সাহাবাওয়ালী আলেম হওয়া। জিয়াউল হক ফারুকীর মতো মুজাহিদ হওয়া। আতাউল্লাহ বোখারির মতো জান্দাদিল মর্দে মুমিন হওয়া।
কওমি মাদরাসার স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, শেষ রাতের রোনাজারী, কানন্নাকাটি, কিয়ামুল লাইলের পাবন্দি, তাহাজ্জুদের এহতাম, আল্লাহর কাছ থেকে চোখের পানি ফেলা সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা তৈরি করা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় এশরাকের নামাজ পড়ে সারা দিনের রিজিকের ফায়সালা করানো। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় সালাতুত চাশত পড়ে নিজের জরুরত আল্লাহর অসীম খাজানা থেকে পুরা করে নেয়ার যোগ্যতা সৃষ্টি করা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় সেই হাদীসের উপর এয়াকীনের সাথে উস্তাদ ও ত্বালাবাদের এয়াকীন ও আমলের মশক, যে সুরায়ে ওয়াকেয়া পড়ে নিজের অভাবকে দূর করা, সুরায়ে ইয়াসিন পরে দরিদ্রতাকে জয় করা। এমন দ্বীনী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানমাল কুরবানী করে পাশে দাড়ানো ও ঠিকিয়ে রাখা বড় প্রযোজন।
আমরা যদি এভাবে আমাদের ছাত্রদের গড়ে তুলতাম, আমাদের এলেমের গভীরতা, ঈমানী মেহনত, আমলের পাবন্দি, তাকওয়ার প্রজ্জলতা, সুন্নতের পুনাঙ্গ অনুসরন আর তায়াল্লুক মায়াল্লার স্বকীয়তাকে ধরে রাখতে পারতাম তাহলে অন্তত দুনিয়ার কোন শক্তির কাছে মাথা নত করতে হতো না। কারো কাছে ছোট হয়ে হাত পাততে হতো না। কোন জালেমেরর ভয়ে তটস্থ থাকতে হতো না।
আজ সেই স্বকীয়তার উপর কতটুকো আছি আমরা?
তিন.
আজ আমাদের অবস্থা কি? কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে আমাদের আর্দশিক নৈতিকতা।বড় বড় সুদখোর মাহাজন, অবৈধ টাকার কুমির, ভুমিখেখো, মানুষখেখু আর গনতন্ত্র, পুজিবাদী সামজ্যবাদের দালালদের মাদরাসার সভাপতি, সেক্রেটারী বানাতে হচ্ছে। তাদের জ্বি জ্বি করে চলতে হচ্ছে মুহতামিমদের। হায় কোথায় আজ আমাদের অধিকাংশ কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা! কয়টি মাদরাসার নাম আঙ্গুলে গুনে বলা যাবে যেখানে তোবন্দের উসুলে হাশতেগানা বা মূলনীতিকে মানছে? দেওবন্দের নেসাব ও নেযামকে ফলো করছে। সুন্নাহ আর তাকওয়ার পাবন্দি আছে?
যে কওমি মাদরাসা নিজেস্ব স্বকীয়তার আলোতে সারা দুনিয়াকে আলোকিত করেছে একদা। যারা গোটা দুনিয়ার পিপাসিত মানুষের তৃষ্ণা মিটিয়েছে। তারাই আজ কেন তৃষিত। কিছু কিছু মাদরাসার অযোগ্য দুনিয়াদার আলেমের তাকওয়াহিন নানান অপকর্ম আজকাল প্রায়ই মিডিয়ার শিরোনাম হয়। কেন এত ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এলো আমাদের ভিতরে। গ্রামে গ্রামে একেকটি মাদরাসার অভ্যান্তরিন দন্ধে পুরো গ্রাম দ্বিদ্বাভক্ত। তাকওয়াহিন, সমাজ ও সৃষ্টাচার বহিভূত একেক কাজে কলংকিত হচ্ছে পুরো সমাজ, দেশ, ধর্ম ও মানবতা। নিজেদের ভিতর দন্ধ সংঘাত আর দলাদলি ও অভ্যান্তরিন কোন্দলের কথা নাইবা বললাম।
কতোটা নকশে সাহাবির ত্বরিকায় তৈরি করছি আমরা ছাত্রদের? কিভাবে গড়ছি ছাত্রদের? যে ধনী ছেলেটা বছরের পর বছর মাদরাসায় পড়ে লিল্লাহ বডিং এ সদকা জাকাত ফিতরা আর গরীবের হক মেরে খাচ্ছে সেই ছেলেটার বাবা বছরের পর বছর অন্যকে জাকাত সদকা ফিতরা দিচ্ছে। অপর আরেকটি সন্তানকে লাখ টাকা খরছ করে কলেজ ভার্সিটিতে পড়াচ্ছে। কিন্তু আমরা মাদরাসা পড়ুয়া ছেলেটিকে নষ্ট করে জাকাতখোর আর ভিক্ষুকে পররিণত করছি কওমির স্বকীয়তার মুলা ঝুলিয়ে, কওমী আর আকাবিরদের দোহাই দিয়ে। আর তাদেরকে নিজ দলীয় কাজে ব্যবহার চোঁখে পড়ার মতো। তাকে নিজের মতো করে মিটিং মিছিলে কাজে লাগাচ্ছি!
কওমি অঙ্গনের অর্থ যদি হয়, সভার নামে, ওয়াজ মাহফিলের নাম করে উম্মাহর হেদায়তের ফিকিরের বদলে কেবল চাঁদা কালেকশন আর চুক্তিভিত্তিক প্রতিদিন হেদায়ত বিলি করার কন্টাক নিয়ে দৈনিক লক্ষ টাকা আয়ের ব্যবস্থা (যা দেশের রাষ্টপতি আর প্রধানমন্ত্রীর বতেন থেকে বহুগুন বেশি) । কওমি মাদরাসার কথিত স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, মাদরাসা আর কয়েকটি প্রতিষ্টান দিয়ে একটি বোর্ডের নামে বানিজ্যকরন আর পরিবার তন্ত্র প্রতিষ্টা করা। তিন চারটি মাদরাসার একসাথে মুহতামিমের পদ আগলে রাখা। কওমি স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় কারো কারো কাছে, বড় বড় বিল্ডিং প্রজেক্ট বাস্তবায়নে ঘনঘন বিদেশ সফর। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় নিজের ছেলে সন্তান, মেয়ের জামাই, ভাই ভাতিজার কর্ম সংস্থান। নিকট আত্বীয়দের লম্বা বেতন ভ্রাতার আয়োজন।
কওমি স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় আজীবন পদ পদবী আকড়ে থাকা। যে যত বড় মুহতামিম সে তত বড়ো টাকার কুমির। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় অল্প টাকা বেতনে অনভিজ্ঞ উস্তাদ নিয়োগ। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, হাজারো ছাত্রদের এলেম আমলের বিপর্যয় তৈরি করা। শতকার দশজন ছাত্র আরবী এবারত পড়তে না পারা। কোরআন তরজমা বুঝতে না পারা। আরবী উর্দুতে কথোকপন করতে না পারা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় হাদীস বুঝার যোগ্যতা তৈরি না হওয়া। ভাল করে বাংলা পড়তে লিখতে না পারা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় সীরাত চর্চার প্রতি অনাগ্রহ। স্বকীয়তার অর্থ যদি ফেকাহের উপর অধিকংশ ছাত্রকে অযোগ্য করে গড়ে তুলা।
কওমি মাদরাসার স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, মাদরাসার চার দেয়ালের ভেতর ছাত্র শিক্ষকদের বোবা কান্না আর দীর্ঘশ্বাসকে আরো লস্বা করা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় মতের উল্টো হলে বহিস্কারের হুলিখেলা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়ে, একদিনের নোটিশে বছরের মধ্যখানে শিক্ষক বদলের নষ্টামি। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, প্রতি বছর ছাত্রদের মাদরাসা বদলের পরিবেশ রক্ষা করা। নিজেদের আখের গোচানো। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয় স্বামী স্ত্রী মিলে চার রুমের বাসা ভাড়া নিয়ে মহীলা মাদরাসা খোলার পক্রিয়াকে আরো তরান্বিত করা। চার পাঁচটি রুম নিয়ে একেকটি জামেয়া খুলে বসা।
স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, ব্যংকে কোটি কোটি টাকা জমা রেখে আবার কমিশনে চাঁদা কালেকশনের দালালা নিয়োগ করা। স্বকীয়তার অর্থ যদি হয়, কোরবানীর চামরা টানাটানি নিয়ে মাদরাসা মাদরাসায় যুদ্ধে অবর্তির্ণ হওয়া। গরবী প্রতিষ্টানগুলোর কোন খোজ নেই কিন্তু বড় মাদরাসাগুলোর বিল্ডিং আর যৌলুসের প্রতিযোগীতা। ছাত্রদের জীবনের মূল্য না দিয়ে, একাডেমিক উন্নতির বদলে মোহতামিমের কোটি প্রতি হওয়ার প্রতিযোগীতা। দেওবন্দিয়তের চেতনার দোহাই দিয়ে নিজের চেতনা প্রতিষ্ঠার বানিজ্যের স্বকীয়তা আর কতদিন?
আমরা সেই নকশে সাহাবা আর আকাবিরদের স্বকীয়তা হারিয়ে অযোগ্য আমলহীন একদল আলেম তৈরির ঠিকাদারি নিয়ে নিজ দেশে পরবাসি হয়ে বসে আছি। আজ অবাক হতে হয় কওমি মাদরাসার সব আর্দশ আর নৈতিকতাকে পায়ের তলাতে পিষ্ট করে নিলজ্জের মতো ৫০হাজার আর লাখ টাকার বাজারি ভাড়াটিয়া বক্তা আনা হয়। আর যাকে আনা হয় তিনিও কওমি আলেম। কোথায় যাচ্ছি আমরা এই উম্মতকে নিয়ে। কোন দাজ্জালি বাহিনীর দিকে নাকি ইমাম মাহদির কাফেলার দিকে।
============
কেন কাদের স্বার্থে আমরা হাজারো সন্তানের দুনিয়া ও আখেরাতকে বরবাদ করছি, সেই হিসাব অবশ্যই একদিন পাই পাই করে দিতে হবে মহান আদালতের এজলাসে।
আমরা সেই স্বকীয়তাই চাই। আমাদের পূর্বের সেই সোনালী দিনে ফিরে যেতে চাই। যে স্বপ্ন ছিল আমাদের আকাবিরদের চোখের তাঁরায়। সেই স্বকীয়তার জন্য উদ্বিগ্ন অনেক দ্বীনদ্বার অভিবাবক। যে স্বকীয়তার কাফেলা আগামি দিনের ইমাম মাহদির কাফেলার মর্দে মুজাহিদ নির্স্বার্থ মুমিন তৈরি করবে।
আজ তাকওয়াহীন,এলেমহীন, সুন্নত, শরীয়ত আর পর্দার মতো মৌলিক শরীয়া নির্দেশ থেকে অধিকাংশ আলেমের নগ্ন বিমূখতা। কওমী মাদরাসার ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার স্বকীয়তার দাবী উঠুক।
এসব ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে কওমী আঙ্গিনাকে বাঁচানোর জন্য তাকওয়া হাসিলের আন্দোলন গড়ে তুলুন। স্বকীয়তা রক্ষার উপরোক্ত দাবীকে জোড়ালো করুন।
লেখকঃ মুহতামিম, মাদরাসায়ে কাশিফুল উলুম হবিগঞ্জ ।