বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১, ০১:১৩ অপরাহ্ন
আদালত প্রতিনিধি, তাবলীগ নিউজ বিডিডটকম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আগামীকালের বৈঠককে সামনে রেখে শুনানীর পরিবর্তী তারিখ আগামী রবিবার ধার্য করেছে মহামান্য আদালত। আজ দুপুর বেলা ২ ঘটিকায় এ্যাডভোকেট ইউনুস মোল্লা কতৃক আগামী ইজতেমা ও ধর্মমন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্রটি পূণর্বহালের বিষয়ে হাইকোর্টের রুলের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। আজ শুনানী চলাকালে শুরুতেই রিটকারীর আইনজীবী শাহ মো. নুরুল আমিন আদালতের সামনে মামলার বিবরণীর ওপর শুনানি করেন। আজ মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই শুনানী চলে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মো. নুরুল আমিন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
শুনানির এক পর্যায়ে আদালতের উদ্দেশ্যে রিটকারীর আইনজীবী শাহ মো.নুরুল আমিন আদালতকে বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা চলছে। তবে দ্বন্দ্ব নিরসন সম্ভব না হলে সরকার দুই পক্ষকে আলাদা-আলাদাভাবে ইজতেমা পালনের যে নির্দেশনা দিয়েছেন তাই পালন করা হবে।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু আদালতকে জানান, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে বুধবার (২৩ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি সভার তারিখ নির্ধারণ রয়েছে। ইজতেমার বিষয়ে সেখান থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসতে পারে।’
রাষ্ট্রপক্ষের এই শুনানির পর মামলাটির পরবর্তী শুনানি ও শুনানি শেষে আদেশের জন্য আগামী ২৭ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস মোল্লা। রিট আবেদনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ তিন জনকে বিবাদী করা হয়।
রিট আবেদনে বাংলাদেশে তাবলিগের কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহাল চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ১৮ সেপ্টেম্বরের পরিপত্র স্থগিত করে একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর জারি করা পৃথক আরেকটি পরিপত্র কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের দুইটি গ্রুপের মধ্যে চলমান বিরোধ মিটিয়ে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ সিদ্ধান্তের কথা জানার পর গত ১৭ জানুয়ারি দেওবন্দ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সেখানে তাবলিগ জামাত নিয়ে সব ধরনের কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের মধ্যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্র জারি করা হয়। উপসচিব দেলোয়ারা বেগম স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্রে উভয় গ্রুপের জন্য পাঁচ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে
পরবর্তীতে একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষরিত ১৮ সেপ্টেম্বরের পরিপত্রের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি পরিপত্র জারি করা হয়। এ অবস্থায় উভয় গ্রুপের মধ্যে বিরোধ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত গতবছর ১ ডিসেম্বর এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহত ও অসংখ্য মুসল্লি আহত হন। সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।