শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১০:২১ অপরাহ্ন
মঙ্গলবার সকালে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবার টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয় ইজতেমার প্রথম পর্ব। গতকাল শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব। কয়েক বছর ধরে সময়ের ব্যবধান রেখে দুই পর্বের ইজতেমা হলেও এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। এবার প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পরদিনই শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব।
প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ঢল নামে ইজতেমায়। পবিত্র হজের পর মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সমাবেশ এই বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমায় বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। দেশ-বিদেশের আলেমরা তাদের বয়ানে ইসলামের মর্মবাণী তথা মানবিক আদর্শ ও ভ্রাতৃত্ববোধের দিকগুলো তুলে ধরেন।
বিশ্ব ইজতেমায় প্রতি বছর তাবলিগ জামাতের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা একত্রিত হন। পারস্পরিক ভাব ও ধর্মীয় জ্ঞান বিনিময় করেন। সারা বছরের কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ইসলাম প্রচারের কাজে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েন। তবে সময়ের পরিক্রমায় বিশ্ব ইজতেমা বর্তমানে আর তাবলিগ কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ইজতেমা আজ পরিণত হয়েছে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সমাবেশে। তাবলিগ জামাত সম্পর্কে যাদের তেমন ধারণা নেই, এমন অনেকেও ইজতেমায় শরিক হন। প্রার্থনা করেন পরম করুণাময়ের রহমত।
এবার বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনে অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় প্রায় সব ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছিল। ইজতেমা মাঠ ঘিরে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষায় সক্রিয় ছিলেন। দু’পর্ব মিলে ইজতেমার সার্বিক আয়োজনকে এক কথায় সুষ্ঠু বলা যায়। তাবলিগ দুই ভাগে বিভক্ত হলেও ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশে নিয়মিত বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের ফলে ইসলাম ধর্মের অনেক মৌলিক শিক্ষা সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। ঈমান, আমল ও ইলম অর্জন এবং আত্মশুদ্ধিতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ইজতেমা সবার জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে এবং মানুষের ভেতর থেকে হিংসা-হানাহানি দূর করে পৃথিবীতে শান্তির অমিয়ধারা প্রবাহিত করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বিশ্ব ইজতেমা পৃথিবীতে সৌভ্রাতৃত্ব প্রসারে সহায়ক হোক।
যুগান্তরের সম্পাদকীয় থেকে নেয়া…