শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০২:২১ পূর্বাহ্ন
মাওলানা আমিনুল ইসলামঃ তাবলীগ নিউজ বিডিডটকম
ঢালাওভাবে সবাইকে নয়। কিছু বক্তা নামের কলঙ্ক, যারা ইসলামের নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, সরলপ্রাণ মুসলমানদের গোমরাহ করে যাচ্ছে, এ ধরনের কিছু ওয়াজ মাহফিলের বক্তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার।
একচেটিয়াভাবে সব ওয়ায়েজীনদের নয়। তবে এমন কিছু বক্তার আবিষ্কার হয়েছে আমাদের দেশে, যাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ইসলাম ও দেশের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
বক্তাদের কিছু আছে, একদম মূর্খ। কোরআন হাদীস নিয়ে কোন লেখাপড়া করেন নি। আবার মাদ্রাসায় পড়লেও কোন রকম বছর গুনে চলে পাড়ি দিয়েছেন। এরা এখন ওয়াজের ময়দানের বড় আল্লামা! দেশে ওয়াজ করে বেড়ান। মনগড়া কোরআন হাদীসের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। বিস্ময়কর হলেও সত্য, এসব বক্তার ওয়াজ শুনে মানুষ গোমরাহীর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
কিছু বক্তা আছে, কমেডিয়ান। ওরা ওয়াজ মাহফিলটাকে নাটকের মঞ্চ বানায়ে ফেলেছেন। মাহফিলের স্টেজে উঠে হাস্যরসের কথা বলেন। বেঁফাস মন্তব্য, অশ্লীল খিস্তি খেউড় করেন। কিছু আছে, নাটকের প্লেয়ারদের মত অভিনয় করে থাকেন। এসব বক্তাদের ব্যাপারে কিছু একটা করা দরকার।
চুক্তিবাদী বক্তাদের ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি। চুক্তি করে ওয়াজ করতে যাওয়া কোন আলেম এটাকে সাপোর্ট করেন না। দ্বীনের দাওয়াত একেবারে লিল্লাহিয়্যাত। আল্লাহর রেজামন্দী হাসিলের জন্য নিজের দায়িত্ব মনে করে করবেন। কিন্তু কিছু ওয়ায়েজীন বেরিয়েছেন, দাওয়াতের সময় টাকা অগ্রিম দিতে হয়। আবার মাহফিল শেষে এত টাকা দিতে হবে, এরকম চুক্তিতে ওয়াজ করতে যেয়ে থাকেন। এ ধরনের ওয়ায়েজীনদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
গোমরাহ আকিদায় বিশ্বাসী ওয়ায়েজীনদের টুটি চেপে ধরা খুবই জরুরি। বক্তার নিজের আকিদা বিশ্বাস সহী নেই। ওয়াজ করে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এধরনের বক্তা খুবই খতরনাক। এরা একেক সময় কোরআন হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষের মাঝে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন এবং করছেন। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার।
এখন কথা হল, এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ করা কীভাবে সম্ভব?
আমার মনে হয়, এব্যাপারে দেশের শীর্ষ আলেমদের নিয়ে একটা ওয়ায়েজীন নিয়ন্ত্রণ কমিটি হতে পারে। যারা দেশের বক্তাদের ওয়াজগুলো মনিটরিং করে একটা সিদ্ধান্ত দিবেন। বর্তমান ডিজিটাল যুগ। প্রত্যেক বক্তার ওয়াজ ধারণ করা হচ্ছে। ধারণকৃত ওয়াজ নিয়ন্ত্রণ কমিটি সেটাকে দেখে শুনে সিদ্ধান্ত দিবেন, কোন বক্তার ওয়াজ সমাজে চলবে, আর কার ওয়াজ চলবে না।
এ জাতীয় আলেম উলামার মাধ্যমে বক্তাদের ওয়াজ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে, বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা দেওয়া বক্তা অনেকখানি কমে যাবে বলে আশা করা যায়।
তাছাড়া অন্য কোন কায়দায় ওয়ায়েজীনদের নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে সেটা সুন্দর দেখাবে না। বরং ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহী বুঝ দান করুন। আমিন।
লেখক : আলেম ও সমাজ বিশ্লেষক