শনিবার, ০৬ মার্চ ২০২১, ১০:২৬ অপরাহ্ন
তাবলীগ নিউজ বিডিডটকম
হযরতজী মাওলানা ইলিয়াস সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি একদিন মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বোখারীকে বলেন,আমি প্রথমে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছি তখন ছাত্রদের ভিড় হয়েছে এবং ভালো ভালো যোগ্যতাসম্পন্ন ছাত্ররা আসতে শুরু করেছে। আমি তখন চিন্তা করলাম তাদেরকে নিয়ে আমার মেহনতের ফল ইহা ছাড়া আর কি হবে যে, যারা আলেম হওয়ার জন্য মাদ্রাসাতে আসে তারা আমার কাছে পড়াশোনা করার পর আলেম বা মৌলভী হবে। অতঃপর তাদের কাজ তাই হবে যা আজকাল সাধারণত গ্রহণ করা হয়ে থাকে। কেহ ডাক্তারি পড়ে ডিসপেন্সারি খুলে বসবে, কেউ ইউনিভার্সিটি তে পরীক্ষা দিয়ে স্কুল কলেজে চাকরি করবে, আবার কেউ মাদ্রাসায় বসে পড়াতে থাকবে। এর চেয়ে অধিক আর কি হবে? এই চিন্তা করে মাদ্রাসায় পড়ানো থেকে আমার অন্তর ফিরে গেল।
এরপর এমন একটি সময় আসলো যে আমার শায়েখ আমাকে খেলাফত দান করে অন্যদেরকে মুরিদ করার অনুমতি দিলেন। আমি তখন মুরিদদের কে জিকিরের তালকীন দিতে শুরু করলাম।আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে মুরিদদের এত তাড়াতাড়ি হালট পরিবর্তন হতে লাগল এবং এত দ্রুত তাদের তরাক্কি হতে লাগলো তাতে আমি নিজেও আশ্চর্য হলাম। তখন আমি চিন্তা করলাম যে এ কাজে লেগে থাকার ফল কি হবে ?বেশি এর থেকে বেশি কিছু জিকির করনেওয়ালা লোক তৈরি হবে।অতঃপর মানুষের মাঝে তাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে, কেউ তখন মোকদ্দমায় জিতবার জন্য দোয়ার জন্য আসবে, কেউ সন্তানের জন্য তাবিজ এর আবেদন করবে, কেউ ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতির জন্য দোয়া করাবে, বেশির থেকে বেশি তাদের দ্বারা ভবিষ্যতে আরও আরও কিছু জাকেরিনদের এর জামাত তৈরি হবে। এই চিন্তা করে সে দিক থেকে আমার মন ফিরে গেল।
তখন আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, আল্লাহ তা’আলা যাহের বাতেন এর যে শক্তি আমাকে দান করেছেন ,তাকে ব্যয় করার সহিহ জায়গা হল ,তাঁকে ওই কাজে ব্যয় করা যে কাজে স্বয়ং রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে তার শক্তি-সামর্থ্য ব্যয় করেছেন। আর তা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে গাফেল এবং বে তলব লোকদেরকে আল্লাহ তালার দিকে নিয়ে আসা এবং আল্লাহ তাআলার বাণী কে সমুন্নত করার জন্য জানকে মূল্যহীন করে দেওয়ার প্রচলন ঘটানো।
ব্যাস, ইহাই আমাদের আন্দোলনের মূল কথা। এবং এ কথাই আমরা সকলকে বলে থাকে। এই কাজ যদি জারি থাকে তাহলে বর্তমানের চেয়ে হাজার গুণ বেশি খানকা এবং মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। বরং তখন প্রত্যেক মুসলমান এই এক একটি মাদ্রাসা এবং খানকা বনে যাবে। তখন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আনীত নেয়ামতসমূহ, তার শান মোতাবেক আম ভাবে বন্টন হতে থাকবে ।
(মালফুজাত)