রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০২:৩৫ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি, তাবলীগ নিউজ বিডিডটকমঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাবলীগের চলমান সংকট তৈরি হওয়ার পর পক্ষে বিপক্ষে প্রচুর ফেসবুক একাউন্ট খুলেছে একাধিক কুচক্রি মহল। এসব ফেসবুক আইডির ৯০ ভাগই ভুয়া ও ফেক আইডি। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংঘাত ও গৃহ বিবাদ উস্কে দেয়ার লক্ষ্যেই এসব ফেক আইডি খুলেছে উগ্রপন্থীরা।
অনুসন্ধানে যানা যায়, তাবলীগ জামাতের শতকরা ৯৫জন সাথীই আ্যন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। আর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক বা তাবলীগ জামাতের সাথে জড়িত উচ্চশিক্ষিত যারা ফেসবুক ব্যাবহার করেন তারাও সীমাহীন ভদ্র, শালীন ও দাওয়াতি কথাবার্তাই লিখে থাকেন।
কিন্তু ইদানিং লক্ষণীয় হারে তাবলীগের মূলধারার নামে অর্থাৎ নিজামুদ্দিন মারকাজ ও মাওলানা সাদ কান্ধালভীর অনুসারী সেজে হাজার হাজার ফেক আইডি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে। এসব আইডি থেকে ভাইরাল করা হচ্ছে নানান গুজব ও অপপ্রচার। করা হচ্ছে গালাগালি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তাবলীগের চলমান সংকটের শুরু থেকেই কমবয়সী কিশোর ও কওমী মাদরাসার যুবক ছেলেদেরকে মাওলানা সাদ কান্ধালভী বিরোধী আন্দোলনে মূল পুজি হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন হেফাজত সমর্থক নেতারা। এসব গুজব আর অপপ্রচারগুলোকে তারাই বাজারজাত করে সাংঘর্ষিক রূপ দান করেন এই অহিংস তাবলীগ জামাতকে।
ইসলামি অঙ্গনে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনগণ ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। বিশেষ করে শিক্ষকতার নির্ধারিত সময় ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানো ছাড়া সারাদিন অবসর থাকায় ছাত্র-শিক্ষক ও মসজিদের যুবক ইমামরা সীমাহীন ফেসবুক আসক্তিতে আক্রান্ত। আড়াল থেকে মুশফিকগ্রুপ খ্যাত একটি আন্তর্জাতিক মাফিয়া লবির একটি চিহ্নিত চক্র এদেশে তাবলীগ নিয়ে নানান মিথ্যাচার প্রতিনিয়ত ভাইরাল করে যাচ্ছে। আর কিছুটা না বুঝেই মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম-মুআজ্জিনরা সারাক্ষণ এসব গুজব ছড়ানো, শুনা কথা ভাইরাল করা, অযাচিত ফতোয়াবাজি করা, সরকার ও উগ্রপন্থী লেখালেখি করাই তাদের অন্যতম দায়িত্ব বানিয়ে নিয়েছেন।
সম্প্রতি এই মুশফিকগ্রুপ তাবলীগের মূলধারা, মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও নিযামুদ্দীন মারকাজের নাম ব্যবহার করে অসংখ্য ভুয়া ফেইসবুক আইডির পসড়া নিয়ে বসেছে। বাহ্যিকভাবে এদের লেখালেখি দেখে বুঝার উপায় নেই যে, এরা মূলধারা বিচ্যুত বা নিযামুদ্দীন মারকাজ বিরোধী। এদের অনেকের প্রোফাইলে বিশ্ব আমীর মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও নিযামুদ্দীন মারকাজের ছবি সাঁটানো রয়েছে। এদের প্রধান কাজই হলো, মূলধারার সাথীদেরকে নানান বিষয় ভাইরাল করে ধোঁকা দেওয়া এবং আলেম-উলামাকে গালাগালি করা। যাতে করে উভয়পক্ষের মাঝে ধর্মীয় সংঘাত ও গৃহবিবাদ তৈরী করে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি উগড়ে দেওয়া যায়। আর না বুঝেই উভয়পক্ষ বিশ্বাস করছেন এই আইডিগুলোকে। যার ফলে দিনদিন ক্ষিপ্ততা ও ভুল বুঝাবুঝি তৈরী হচ্ছে উভয়ের মাঝে।
উল্লেখ্য যে, বিশ্ব আমীর শাইখুল ইসলাম আল্লামা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা কখনোই গালাগালি কিংবা অশ্লীল ভাষা ব্যবহার অথবা হক্বানী উলামায়ে কেরামের শানে বেয়াদবীমূলক কোন শব্দ উচ্চারণ করেন না।
কারণ, আল্লামা সাদ কান্ধলভী সবসময় বলে থাকেন, উলামায়ে কেরামকে মুহসিন মনে করো। তারা যদি ভুল ধরে থাকেন তাহলে নিজেকে সংশোধন করো। আর যদি তারা ভুল ধরতে গিয়ে ভুল করে থাকেন তাহলে সবর করো। সংশোধনের দ্বারাও তারবিয়ত হয়। আবার সবর দ্বারাও তারবিয়ত হয়। তাই যারা আমীরের আনুগত্যের বাহিরে গালাগালি করে তারা কখনোই নিযামুদ্দীন কিংবা বিশ্ব আমীরের অনুসারী মূলধারার সাথে নেই। বরং তারা তৃতীয় পক্ষ থেকে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব করে যাচ্ছে। যাদের ব্যপারে এখনি সজাগ না হলে সমাজ ও রাষ্ট্রকে চরম মূল্য গুণতে হবে।