সোমবার, ০৮ মার্চ ২০২১, ০৩:০২ অপরাহ্ন
ঢাকা অফিস : তাবলীগ নিউজ বিডিডটডটকম
চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে নিজ জমির উপর নিজ অর্থায়নে নির্মিত মসজিদে নামাজরত অবস্থায় হামলার শিকার হলেন দেশ বরেণ্য বর্ষিয়ান আলেমে দ্বীন, উস্তাদুল উলামা ও বাংলাদেশের শীর্ষ মুফতি, আল্লামা ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীসহ একাধিক উলামায়ে কেরাম ও তাবলীগের বর্ষীয়ান মুরুব্বী আবদুল হালীমসহ আরো কয়েকজন। তাবলীগের ভিতর পরিকল্পিতভাবে ফেতনাসৃষ্টিকারী মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী কতিপয় সন্ত্রাসী এই বর্বর ও নৃসংশ হামলা চালিয়েছে বলে স্থানীয় জনসাধারণ ও আহত ব্যক্তিরা নিশ্চিত করেছেন। উক্ত ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। দেশের চিন্তাশীল ১০১ উলামায়ে কেরাম তাৎক্ষণিকভাবে পৃথক বিবৃতিতে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।
এক বিবৃতিতে উলামায়ে কেরাম বলেন, গত ২৬শে জুলাই মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি সোনারং মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে হাটহাজারীর মাওলানা আহমদ শফির উষ্কানিমূলক ও মিথ্যাচারপূর্ণ বক্তব্য প্রদানের পর থেকে সন্ত্রাসীরা রক্ত-পিপাসু হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় মসজিদ থেকে তাবলীগের জামাত মারধর করে বের করে দেওয়া, জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিদেশি জামাতের খাবার পানিতে এসিড মিশিয়ে হত্যাচেষ্টা করা ও সর্বশেষে গতকাল চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে মুফতি ইজহার সহ একাধিক উলামায়ে কেরাম ও লাভলেইনের শূরা ও মুরুব্বিদের উপর হামলা করার মত ঘটনা একের পর ঘটিয়েই যাচ্ছে।
আরেক বিবৃতিতে উলামায়ে কেরাম দাবি করেন, মাওলানা আহমদ শফি ও কাকরাইলের সাবেক শূরা ক্বারী জুবায়েরকে জিজ্ঞেসাবাদ করলেই এসব ঘটনার নেপথ্যশক্তি বের হয়ে আসবে।
বিবৃতি দানকারী উলামায়ে কেরাম হলেনঃ মাদরাসায়ে মুঈনুল ইসলাম বারিধারার মুহতামিম মুফতী আতাউর রহমান, কাকরাইলের আহলে শূরা ও বর্ষীয়াণ আলেমে দ্বীন মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, তাবলীগের শীর্ষ মুরুব্বী মাওলানা আশরাফ আলী, কাকরাইল মাদরাসার সিনিয়র উস্তাদ মাওলানা মুনীর বিন ইউসুফ, মাওলানা আব্দুল্লাহ মনসুর, মারকাযে ঊলূম আশ শারিয়ার মুহতামিম ও তাহযীব ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা জিয়া বিন কাসিম, মাদরাসাতুস সুফফার মুহতামিম মুফতি শফিউল্লাহ, কাকরাইল মসজিদের খতিব মুফতী আনাস বিন মুজাম্মিল, সাভার দারুল উলূম রাহমানিয়ার মুহতামিম মুফতী আযীমুদ্দীন, মাদরাসা তা’লীমুল কুরআন টঙ্গীর মুহতামিম মুফতি ফয়সাল, কাকরাইল মাদরাসার সাবেক উস্তাদ মাওলানা সাইফুল্লাহ বিন্নূরী, বিশিষ্ট লেখক মাওলানা মুনীর বিন শাকিম, মাদরাসাতুল হুদা আল আরাবিয়া যাত্রাবাড়ির মাওলানা সানাউল্লাহ, মাসিক আত তাহকীকের সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ, দারুল উলূম উত্তরার প্রতিষ্ঠাতা ও ইত্তেহাদুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা মু’আয বিন নূর, উত্তরা বাইতুস সালাম মাদরাসার সাবেক উস্তাদ মুফতী শামসুদ্দীন, লেখক ও অনুবাদক মাওলানা নিজামুদ্দীন মিসবাহ, সুলেখক মুফতী এনায়েতুলাহ, দারুর রাশাদ ঢাকার উস্তাদ মাওলানা ইদ্রিস, মাদরাসা আরাবিয়্যার মুহতামিম মুফতী মীযানুর রহমান, মুফতী ফয়জুর রহমান সাহেব, মুফতি আসাদুল্লাহ সাহেব, মাওলানা আব্দুল আজিজ সাহেব, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক সাহেব, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মুফতী নূরুল ইসলাম কাসেমী, মুফতি মাসউদুল করিম, মাওলানা জাকির হুসাইন, মাওলানা আবুল হাসান সাহেবসহ ১০১আলেম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবী ও প্রতিবাদ জানান।
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনায় মুফতী ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও তাবলীগের চট্টগ্রাম মারকাযের আহলে শুরা ও প্রবীণ মুরুব্বী আব্দুল হালিম সাহেব, তার খাদেম মাওলানা নাসির, মাওলানা নূরুল আবসার ও গাড়ির ড্রাইভারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের লালখান বাজার মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল আল্লামা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট ২০১৯) চট্টগামের বাশখালিতে মসজিদের ভিতর জোহরের নামাজ পড়তে গেলে ৩০/৪০ জন জুবায়েরপন্থী সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্রসহ তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীর কাছ থেকে মোবাইল সেট, সঙ্গে থাকা মানিব্যাগসহ দু’পকেটের সবকিছু নিয়ে গেছে বলে জানানো হয়েছে। দেশের একজন বয়োবৃদ্ধ শীর্ষ আলেমের উপর এমন বর্বর হামলায় দেশের নিরাপত্তা ও জঙ্গিবাদের হুমকী নিয়ে উদ্ধিগ্ন সচেতন আলেম সমাজ।