
রংপুর মহানগরীর দমদমার বুক চিরে ঘাঘট নদীর তীরে আঞ্চলিক ইজতেমা মাঠে শুক্রবার জুমার নামাজে হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লাখ লাখ মানুষ। তাবলিগের মুসল্লি ছাড়াও মহানগরী ও আশপাশের উপজেলা এবং রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা এতে অংশ নেন।
তিন দিনব্যাপী চতুর্থবারের মতো রংপুরে এই আঞ্চলিক ইজতেমা শনিবার সাড়ে ১১টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় তিন দিনব্যাপী ইজতেমা। এ মোনাজাতে লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমার মূল প্যান্ডেলের বাইরে নদীর তীরে, জমিতে, মহাসড়কে নিজেদের আনা চট ও জায়নামাজে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। প্রচণ্ড রোদে ধুলোধূসরিত ময়দানে মহান আল্লাহর স্তুতিতে রুকু ও সেজদায় মস্তক অবনত করেন তারা।
মুসল্লি খোরশেদ আলম জানান, এই ইজতেমার মাধ্যমে ইসলামের প্রসারের পাশাপাশি মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরও বাড়বে। জুমার নামাজে তাবলিগের মুসল্লি ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নিয়েছেন অধিক সওয়াবের আশায়।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রে যেন ইসলামের সুমহান আদর্শ বাস্তবায়িত হয় সেই কামনা করি। অপর মুসল্লি মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ ইউনিয়নের শালাইপুর গ্রামের তরুণ মো: মাহমুদুল হাসান রাব্বী জানান, তাবলিগ জামায়াতের আয়োজনে যে শৃংখলা থাকে, তা আমাকে মুগ্ধ করে। আমরা সবাই যদি ইসলামের বার্তায় এভাবে শৃংখলিতভাবে জীবনযাপন করি, তাহলে দুনিয়া ও আখেরাতে আমরা ভালো থাকব বলে মনে করি।
চতুর্থবারের মতো রংপুরে এই আঞ্চলিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে নগরীর মিঠাপুকুরের সীমান্তে দমদমা ধর্মদাস মোহাম্মদপুর ও ইসলামপুর এলাকায় দমদমা নদীর তীরের ৪০ একর জমিজুড়ে। এবার এখানে ১৩টি খেত্তায় রংপুর জেলা ছাড়াও বিভাগের ৭ জেলা এবং ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। এবার এখানে ৪ শতাধিক তাবলিগের সাথি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মেটাল ডিরেক্টর দিয়ে চেক করা হচ্ছে সন্দেহভাজনদের। পোশাকি পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকি আইনশৃংখলা বাহিনী তিন স্তরে নিরপত্তাবলয় বসিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস এর বিশেষ টিম মোতায়েন করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের প্রায় দুই শতাধিক দোকানপাট বসেছে।
শনিবার সাড়ে ১১টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় তিন দিনব্যাপী । রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার তদন্ত আনোয়ার হোসেন জানান, অত্যন্ত শৃংখলিতভাবে ইজতেমা পরিচালিত হচ্ছে। কোনো ধরনের অসুবিধা হচ্ছে না মুসল্লিদের। ট্রাফিক সিস্টেম খুব কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণ করায় কোনো ধরনের যানজট সৃষ্টি হয়নি।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো: জমির উদ্দিন জানান, ইজতেমায় এক লাখেরও বেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। পোশাকি ও সাদা পোশাকি ৩ স্তরের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া আঞ্চলিক ইজতেমা শনিবার আখেরি মোনাজাতে মুসল্লির সংখ্যা আরও বাড়বে।