রবিবার, ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন
গত কয়েকদিন ধরে কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড হাইয়াতুল উলয়া ও বেফাকের কেন্দ্রীয় পরিক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ তুলপাড় চলছে। কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের লেখায় বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। এবিষয়ে ফেসবুকে নিজের অবিজ্ঞতা লিখেছেন ইয়াসিন আল হানাফি
গত পরিক্ষা সরহে মাআনিল আসার পরিক্ষা দিতে যাওয়ার সময় দেখি করেকজন মিলে প্রশ্ন দেখছে। অবাক করা বিষয় হলো সেটা এই বছরের প্রশ্ন ছিলো। আমি বললাম দেখি কি এসেছে, দুই একটা প্রশ্ন দেখে পরিক্ষায় চলে গেলাম। প্রশ্ন হাতে পেয়ে দেখি এটা তো সেই প্রশ্ন যেটা পরিক্ষার হলে আসার পূর্বে দেখেছি। মনটাই খারাফ হয়ে গেলো। পরিক্ষা দেওয়ার ইচ্ছে করছিলোনা।
মনের ব্যাথা নিয়ে পরিক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট বললাম, হুজুর এই প্রশ্ন তো ফাঁস হয়েছে। আশা ছিলো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা আশাই থেকে গেলো।
যাই হোক নিজে নিজের যোগ্যতা দিয়ে পরিক্ষা দিবো, এমন মন-মানুষিকতা নিয়েই বুখারী আউয়াল জন্য পড়াশোনা শুরু করলাম। কিন্তু না, রাত কেটে সকাল হওয়ার পূর্বেই আরেক কাহানী।
রাত ১২টার পর মেশকাত জামাতের এক ছাত্র আমার পাশের এক ভাইয়ের কাছে প্রশ্ন বিক্রি করতে এসেছে। বুখারী আউয়াল প্রশ্ন, দাম ১০০০ টাকা,প্রশ্ন না মিললে টাকা ফেরত। মেশকাতের এই ছাত্র ছিলো প্রশ্নের হকার।
তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো এটা কোথা থেকে হচ্ছে, সে বললো গোড়া থেকে। এবং সারা দেশেই এই কাজ হচ্ছে। ছেলেটি ঘুরে ঘুরে সবাইকে বলছে, প্রশ্ন লাগবে। আমরা কয়েকজন তাকে মারার ইচ্ছে করলাম। কিন্তু কিছু ছাত্রভাই বললো, তাকে মেরে লাভ কি! সারা দেশে এই কাজ হচ্ছে।
তাই আমি সারাদেশব্যাপী যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে হাতিয়ার হিসেবে বেচে নিলাম। আমার অনেক ছাত্র ভাই বললো, নিজেদের দোষ প্রচার করার মানে হয়না। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এটা সত্য প্রচারের জন্য জরুরী। অন্যায় দেখে প্রতিবাদ না করার মত মুসলিম আমি নয়।
স্কুল-কলেজ এ যখন প্রশ্ন ফাঁস হয় তখন তো আমরা সবাই মজা নেই। এখন যখন মাদ্রাসায় এমন কাজ হচ্ছে তখন চুপ থাকা মুনাফেকি ছাড়া আর কিছু নয়।
যারাই আমার এই পোস্ট পড়বেন দয়া করে শেয়ার করবেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন কওমী মাদ্রাসার এই গুরুত্বপূর্ণ পরিক্ষায় যারা খেয়ানত করছে তারা যেন আইনে আওতায় চলে আসে।
হে আল্লাহ! কওমী মাদ্রাসা হেফাজত করুন। আমিন।